পাকিস্তানের বিপক্ষে গত ম্যাচের ঘটনা। ইনিংসে ২৯তম ওভারে প্রথম বলটি
তিনি করলেন বাঁ হাতে। পরের দুটি বলও বাঁহাতি স্পিন করে গেলেন শায়লা শারমিন।
ওই ওভারের চতুর্থ বলে পুরো ডানহাতি অফ স্পিনার বনে গেলেন বাংলাদেশের এই
বোলার।
দুর্লভ এ ছবি দেখা গেছে পরশু কলম্বোয় মেয়েদের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে
বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচে। দুই হাতে বোলিং করা শায়লার নাম এরই মধ্যে
ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে।
দুই হাতে বোলিং করতে পারে, এমন বোলার ক্রিকেটেই বিরল। শ্রীলঙ্কার
কামিন্ডু মেন্ডিস, ভারতের অক্ষয় কারনেওয়ার ও পাকিস্তানের ইয়াসির জানের নাম
জানা গেছে এর আগে। মেয়েদের ক্রিকেটে সেটি তো আরও দুর্লভ। মেয়েদের
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আগে কখনো এমন বোলার দেখা গেছে কি না গবেষণার বিষয়।
একই
ওভারে দুই হাতে বোলিং দিয়ে ‘সব্যসাচী’ বোলারদের বিরলতম তালিকায় নতুন নাম
লেখানো শায়লার সঙ্গে কথা হলো কাল। কীভাবে কঠিন এই কাজটা রপ্ত করেছেন
শ্রীলঙ্কা থেকে মুঠোফোনে বললেন তিনি, ‘জন্মগতভাবে আমি ডানহাতি। তবে
বাংলাদেশে প্রচুর ডান হাতি স্পিনার থাকায় বাঁ হাতে বোলিংয়ের ভাবনাটা আসে।
এমনিতে বাঁ হাতে জোরের সঙ্গেই থ্রো করতে পারতাম। বছর তিনেক আগে আমার কোচ
বিরাজ সিং আর পিলু স্যারের পরামর্শে বাঁ হাতে বোলিং শুরু করি। শুরুতে
ভালো না হলেও এখন দুই হাতে নিয়ন্ত্রণ চলে এসেছে।’
২০১৩ সালের
সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া শায়লা এরই মধ্যে খেলেছেন ৫
ওয়ানডে ও ৮ টি-টোয়েন্টি। কিন্তু দলে থিতু হতে পারেননি এখনো। বাংলাদেশ
মহিলা ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ ও ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার আশিকুর রহমান
বললেন, তিনি ব্যাটার হলেও এবার তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছে এই বিশেষ প্রতিভা
দেখে, ‘একদিন নেটে দেখি সে দুই হাতে বোলিং করছে। তখন আমাদের ভাবনায় এল ওকে
কীভাবে ম্যাচে কাজে লাগানো যায়। দলে বাঁহাতি স্পিনারের সংকট থাকায় প্রধান
কোচ (ডেভিড ক্যাপেল) ওকে বাঁ হাতে বোলিং করতে বলেছেন। কিন্তু সে যদি
ব্যাটারের ব্যাটিং স্টাইল বুঝে হাত বদল করতে পারে সেটা আরও ভালো হয়। এটা
ভেবেই গত ম্যাচে দুই হাতে বোলিং করছে সে।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চার
বছর কাটিয়ে দেওয়া শায়লা পরশু প্রথম ডান ও বাঁ হাতে বোলিং করেছেন। বোলিং
যদিও খুব একটা ভালো হয়নি। ৩ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। তবে
ভবিষ্যতে বিরল এই প্রতিভাকে কাজে লাগাতে চান শায়লা।
No comments:
Post a Comment