বিশাল এক অর্জনের অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। আজ জয় পেলেই কোনো পূর্ণ শক্তির
বড় দলের মাঠে সিরিজ জিতত। সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) মাঠের নামটাও
তাই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে জায়গা করে নিতে পারত অন্যভাবে। কিন্তু
কিছুতেই কিছু হলো না। এসএসসির ‘পরীক্ষায়’ পাস করতে পারেনি বাংলাদেশ। সিরিজ
নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচে ৭১ রানে হেরেছে মাশরাফিরা। সিরিজটাও শেষ হয়েছে ১-১
সমতায়।
অনেক দিন পর কোনো ওয়ানডেতে এমন কিছু দেখা গেল। বাংলাদেশের ইনিংসের
মাঝপথেই ম্যাচ নিয়ে আগ্রহ শেষ হয়ে গেল! ২৬তম ওভারে মাহমুদউল্লাহ যখন আউট
হচ্ছেন, তখন তো উল্টো চিন্তা, দেড় শ রানেই না হারে বাংলাদেশ! গত দুই বছরে
এমন একপেশে কিছু ম্যাচ বাংলাদেশ খেলেছে বটে। কিন্তু আফগানিস্তান,
জিম্বাবুয়ে কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সে ম্যাচগুলোতে জয়ী দলের নাম ছিল
বাংলাদেশ! শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতেও ৯০ রানের বড় ব্যবধানে
জিতেছে মাশরাফির দল।
শেষ দিকে সান্ত্বনা হয়ে এসেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
দলের স্বীকৃত সব ব্যাটসম্যানই ফিরে গেছেন ড্রেসিংরুমে। অধিনায়ক মাশরাফিও
ফিরে গেছেন একটু পরে। কিন্তু তাসকিনকে (১৪) নিয়েই শেষ লড়াইটা চালালেন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নবম উইকেটে রেকর্ড জুটিকে টেনেছে ৫৪-তে। পেয়েছেন
ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে ফিফটি। সবচেয়ে বড় কথা অসম্ভব এক জয়ের স্বপ্নও
দেখিয়েছেন তিনি। শেষ ৬ ওভারে ৭২ রান তো কঠিন কিছু না। কিন্তু ৪৫তম ওভারের
প্রথম বলেই নুয়ান কুলাসেকেরার তৃতীয় শিকার হয়ে ফিরেছেন মিরাজ (৭১ বলে ৫১)।
বাংলাদেশও এক রান পরেই অলআউট হয়েছে ২১০ রানে।
এমন পরাজয়ের পেছনে বেশ
কিছু কারণই খুঁজে নিতে পারেন অনেকে। টসে জিতে বোলিং নেওয়ার সিদ্ধান্তও এর
মধ্যে একটা। তবে সে সিদ্ধান্তটা ঠিক ছিল না ভুল—সে তর্কে যাওয়ার সুযোগই
মিলল না। সিরিজের শেষ ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার ব্যাটে-বলে জ্বলে ওঠা আর
বাংলাদেশের ম্লান হয়ে যাওয়া মিলে গেল একসঙ্গে।
আগের দিনের সংবাদ
সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেছিলেন, এ মাঠের গড় সংগ্রহটা ২৭০
থেকে ২৯০–এর মধ্যে থাকে। সে জন্যই কিনা শ্রীলঙ্কা আজ ঠিক ২৮০ রানই করল (২৭০
ও ২৯০ এর গড়)!
এই রান তাড়া করতে নেমে ১১ রানেই নেই ৩ উইকেট।
সাকিব-সৌম্যর দ্রুতগতির ৭৭ রানের জুটিতে স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ৩৯
রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে একেবারেই ছিটকে পড়েছিল বাংলাদেশ।
৬২ বলে ৫৪ রান করা সাকিব ফেরার পরই কার্যত ম্যাচটা শেষ হয়ে গিয়েছিল।
ইনিংসের শেষটা শুধু ভবিষ্যতের সান্ত্বনাই দিল, ওয়ানডেতেও সত্যিকারের এক
অলরাউন্ডার হয়ে উঠছেন মিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা : ৫০ ওভারে ২৮০/৯ (কুশল
মেন্ডিস ৫৪, পেরেরা ৫২, থারাঙ্গা ৩৫, গুনাতিলকা ৩৪, গুনারত্নে ৩৪; মাশরাফি
৩/৬৫, মোস্তাফিজ ২/৫৫, মিরাজ ১/৪৯, তাসকিন ১/৫০, সাকিব ০/৪১, মোসাদ্দেক
০/১৩, মাহমুদউল্লাহ ০/৫)
বাংলাদেশ : ৪৪.৩ ওভারে ২১০ (তামিম ৪, সৌম্য ৩৮,
সাব্বির ০, মুশফিক ০, সাকিব ৫৪, মোসাদ্দেক ৯, মাহমুদউল্লাহ ৭, মিরাজ ৫১,
মাশরাফি ১৬, তাসকিন ১৪, মোস্তাফিজ ১*; কুলাসেকেরা ৪/৩৭, প্রসন্ন ২/৩৩,
লাকমল ২/৩৮, দিলরুয়ান ২/৩৮)
ফল : শ্রীলঙ্কা ৭০ রানে জয়ী।
সিরিজ : ১-১ সমতা।
No comments:
Post a Comment