Wednesday, January 11, 2017

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন সীমা কমল

 হুন্ডিতে রেমিটেন্স ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন রোধে মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নীতিমালায় কমিয়ে আনা হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ক্যাশ-ইন ও ক্যাশ-আউটসহ ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে অর্থ হস্তান্তরের পরিমাণ।
এর মাধ্যমে দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রম সংকুচিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ থেকে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সেবা বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়। মহাব্যবস্থাপক লীলা রশিদ স্বাক্ষরিত সার্কুলারটি সেবা প্রদানকারী সব ব্যাংক ও সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, একজন গ্রাহক দিনে ২ বার সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা জমা (ক্যাশ-ইন) করতে পারবে। এভাবে মাসে সর্বোচ্চ ২০ বার ক্যাশ-ইন করতে পারবে মোট ১ লাখ টাকা। একইভাবে একজন গ্রাহক দিনে সর্বোচ্চ ২ বার ১০ হাজার টাকা, মাসে সর্বোচ্চ ১০ বার মোট ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। তবে একটি মোবাইল হিসাবে টাকা জমা হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই হিসাব থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকার বেশি নগদ উত্তোলন করা যাবে না বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
যদিও আগের নীতিমালা অনুযায়ী একজন গ্রাহক দিনে ৫ বার জমা (ক্যাশ-ইন) ও ৩ বার উত্তোলন (ক্যাশ-আউট) করতে পারতেন। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক প্রতিদিন নগদ ২৫ হাজার টাকা জমা ও উত্তোলন এবং মাসে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নগদ জমা ও উত্তোলন করতে পারতেন।
তবে পি টু পি (ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি) পদ্ধতিতে অর্থ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে পূর্ব নির্ধারিত সীমা তথা প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা এবং মাসে মোট ২৫ হাজার টাকা বহাল থাকবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস দ্রুত বিকাশমান একটি সেবা, যা অতি অল্প সময়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশেষত নিন্ম আয়ের জনগোষ্ঠীর মাঝে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি সেবাটির অপব্যবহার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে- যা দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতিকর।
এতে বলা হয়, একজন ব্যক্তি কোনো এমএফএস প্রোভাইডারের সঙ্গে একাধিক মোবাইল হিসাব চলমান রাখতে পারবেন না। সে পরিপ্রেক্ষিতে কোনো গ্রাহকের একই জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড বা অন্য কোনো পরিচয়পত্রের বিপরীতে একই প্রতিষ্ঠানের একাধিক মোবাইল হিসাব থাকলে ওই গ্রাহকের সঙ্গে আলোচনা করে তার বেছে নেয়া যে কোনো একটি মোবাইল হিসাব চালু রেখে অন্য হিসাবগুলো বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ব্যবস্থা গ্রহণ কঠিন হলে যে হিসাবটিতে সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে তা চালু রেখে অন্য হিসাবগুলো বন্ধ করতে হবে।
উল্লিখিত পদক্ষেপ গ্রহণের সময় যেসব মোবাইল হিসাব বন্ধ করা হবে তার সমুদয় স্থিতি সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে পরিশোধের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো মোবাইল হিসাবে ৫ হাজার টাকা বা তার বেশি নগদ অর্থ জমা (ক্যাশ-ইন) বা উত্তোলন (ক্যাশ-আউট) করার ক্ষেত্রে গ্রাহক কর্তৃৃক তার পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড বা তার ফটোকপি এজেন্টকে দেখাতে হবে এবং এজেন্ট গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করবেন।
এজেন্ট গ্রাহকের মোবাইল হিসাবে নগদ অর্থ জমা করে (ক্যাশ-ইন) এবং উত্তোলনের (ক্যাশ-আউট) বিবরণ পৃথক পৃথক রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করবেন এবং লিপিবদ্ধ প্রত্যেকটি লেনদেনের বিপরীতে গ্রাহকের স্বাক্ষর বা টিপসহি সংরক্ষণ করতে হবে।
এসব শর্ত এজেন্ট যথাযথভাবে সম্পাদন করবেন এবং এতে কোনো গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে এজেন্টশিপ বাতিল করতে হবে।
source:jugantor


No comments:

Post a Comment

Sponsor