২৬
শে মার্চ আমাদের
জাতির আত্মপরিচয় অর্জনের দিন। পরাধীনতার শিকল
ভাঙার দিন। আসুন সকল
ভেদাভেদ ভুলে মহান
মুক্তিযুদ্ধের
চেতনা ধারণ করে
আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের
উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে এগিয়ে
নিয়ে যাই। সবাই মিলে
একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও
সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে
তুলি।
প্রতিষ্ঠা করি জাতির
পিতার স্বপ্নের ‘সোনার
বাংলা’। আজকের
এই ঐতিহাসিক দিনে
এই হোক আমাদের
অঙ্গীকার। মহান
স্বাধীনতা ও জাতীয়
দিবস উপলক্ষে আজ
শনিবার দেওয়া এক
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ
কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,
আওয়ামী লীগ সরকার
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেনতায়
উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের
উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ
করে যাচ্ছে। গত
৮ বছরে আমরা
দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাঙ্খিত অগ্রগতি অর্জন
করেছি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন
বিশ্বে ‘রোল মডেল’। ২০২১ সালের
আগেই আমরা বাংলাদেশকে মধ্যম
আয়ের এবং ২০৪১
সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে
পরিণত করব, ইনশাআল্লাহ।
প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী
এবং উন্নয়ন ও
গণতন্ত্রবিরোধীদের
যেকোনো অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার
জন্য দেশবাসীর প্রতি
আহ্বান জানিয়ে বলেন,
লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত
স্বাধীনতা বাঙালি জাতির
শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই
অর্জনকে অর্থপূর্ণ করতে
সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত
ইতিহাস জানতে হবে,
স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ
করতে হবে। প্রজন্ম থেকে
প্রজন্মান্তরে
পৌঁছে দিতে হবে।
স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বাঙালি
জাতির মুক্তি সংগ্রামের মহানায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি,
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের প্রতি
গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, যাঁর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে আমরা
অর্জন করেছি প্রিয়
স্বাধীনতা।
শেখ
হাসিনা মহান স্বাধীনতা ও
জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসী এবং
প্রবাসী বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও
অভিনন্দন জানিয়ে বলেন,
আমরা সপরিবারে জাতির
পিতা হত্যার বিচারের রায়
কার্যকর করেছি। একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায়
কার্যকর করা হচ্ছে।
জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে আমাদের
সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি
অনুসরণ করছে। সংবিধানে পঞ্চদশ
সংশোধনীর মাধ্যমে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা
দখলের সুযোগ বন্ধ
করেছি। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী
এবং উন্নয়ন ও
গণতন্ত্রবিরোধীদের
যে-কোনো অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার
জন্য আজকের এদিনে
তিনি দেশবাসীর প্রতি
আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি
জাতি দীর্ঘ ২৩
বছর পাকিস্তানি শাসকদের নিপীড়ন
এবং বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই
করে। তারা বাধ্য
হয় ১৯৭০ সালে
দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের। নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী
লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন
করে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী গণতান্ত্রিক উপায়ে
ক্ষমতা হস্তান্তর না
করে উল্টো নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ
করে। বঙ্গবন্ধু ৭
মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা
করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের
মুক্তির সংগ্রাম, এবারে
সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’।
তিনি বাঙালি জাতিকে
শত্রুর মোকাবিলা করার
নির্দেশ দেন।
তিনি
মুক্তিযুদ্ধের
৩০ লাখ শহিদ
এবং দুই লাখ
সম্ভ্রমহারা মা-বোনকে
শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন,
‘ যাঁদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত
হয়েছে কাঙ্খিত বিজয়।
তিনি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন
জাতীয় চার নেতার
প্রতি। সম্মান জানান
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল
মুক্তিযোদ্ধাকে।
যারা স্বজন হারিয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন
তাদের প্রতি গভীর
সমবেদনা জানান এবং
সকল বন্ধুরাষ্ট্র, সংগঠন
ও ব্যক্তি, যারা
আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অকৃপণ
সহায়তার হাত বাড়িয়ে
দিয়েছিলেন তাদের প্রতি
কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী
১৯৭১ সালের ২৫
মার্চ কালরাতে নিরীহ
ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর
হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।
ঢাকাসহ দেশের শহরগুলোতে হাজার
হাজার মানুষকে হত্যা
করে। জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
২৬ মার্চের প্রথম
প্রহরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা
করেন। এই ঘোষণা
টেলিগ্রাম, টেলিপ্রিন্টার ও
তৎকালীন ইপিআর-এর
ওয়ারলেসের মাধ্যমে সমগ্র
বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া
হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এই
ঘোষণা প্রচারিত হয়।
জাতির পিতার নির্দেশে পরিচালিত ৯
মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে
১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়
অর্জিত হয়।
No comments:
Post a Comment