মোরাতুয়ায় বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি একাদশের মধ্যে দুই
দিনের প্রস্তুতি ম্যাচটা ড্র হয়েছে। অবশ্য এ ম্যাচে যে কোনো দল জিতবে না,
এটা বোঝাই যাচ্ছিল। আগের দিন তামিম-মুমিনুলরা দারুণ ব্যাট করেছেন। কাল
বোলিংয়ের শুরুটাও হয়েছিল দারুণ। তবুও প্রস্তুতি ম্যাচে একটি জায়গায়
বাংলাদেশের অতৃপ্তি থেকেই যাচ্ছে। প্রায় পাঁচ সেশন মুশফিকরা এগিয়ে থাকার
পরও ম্যাচ শেষে শ্রীলঙ্কানদের হাসিটাই যেন বেশি চওড়া!
৭ উইকেটে ৩৯১ রানে
ইনিংস ঘোষণা করে কাল বোলারদের ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেন বাংলাদেশ
অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। চতুর্থ ওভারে ২ উইকেট তুলে নিয়ে দিনটা নিজেদের করে
নেওয়ার বার্তা দেন তাসকিন আহমেদ। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে আবারও উইকেট
পেয়েছেন বাংলাদেশের এই পেসার। ১১ ওভার বোলিং করে তাসকিনের উইকেট অবশ্য এ
তিনটিই। প্রায় দুই বছর পর টেস্ট খেলার অপেক্ষায় থাকা মোস্তাফিজও ভালো
বোলিং করেছেন। প্রথম স্পেলে উইকেট না পেলেও পরের স্পেলে দারুণ এক ফিরতি
ক্যাচ নিয়ে ফিরিয়েছেন শ্রীলঙ্কান ওপেনার রণ চন্দ্রগুপ্তকে। তৃতীয় স্পেলে
উইকেটশূন্য, চতুর্থটিতে ‘ফিজ’ আবার তুলে নিয়েছেন লিও ফ্রান্সিসকোকে। সব
মিলিয়ে ১২ ওভারে ২৮ রান দিয়ে ২ উইকেট বাঁহাতি এ পেসারের, মেডেন ৪টি।
এই
উইকেটে শ্রীলঙ্কান স্পিনাররা খুব একটা ভালো করেননি। বাংলাদেশের স্পিনাররা
কেমন করেন, সেটি দেখার অপেক্ষা ছিল। মোস্তাফিজ-তাসকিন সাফল্য পেলেও সাকিব
আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মাহমুদউল্লাহকে দিনভর
ভুগিয়েছেন দিনেশ চান্ডিমাল। শ্রীলঙ্কা বোর্ড সভাপতি একাদশ যে শেষ পর্যন্ত ৭
উইকেটে ৪০৩ রান করল, সেটি চান্ডিমালের সৌজন্যেই। ২১ চার ও ৭ ছয়ে ১৯০ রান
করে অপরাজিত ছিলেন শ্রীলঙ্কান এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।
একটা সময়
টেস্টে বাংলাদেশকে নিয়মিত ভুগিয়েছেন সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনে-দিলশান।
শ্রীলঙ্কান এই তারকাত্রয়ী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেও যোগ্য
উত্তরসূরি হিসেবে যেন রেখে গেছেন চান্ডিমালকে। বাংলাদেশের বিপক্ষে এখন
পর্যন্ত যে চারটি টেস্ট খেলেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান, তার তিনটিতেই
করেছেন সেঞ্চুরি। গড়টাও বিস্ময়কর—১২৮.৩৩! এবারও যে তিনি মুশফিকদের ভোগাতে
পারেন, সেটিই যেন জানিয়ে রাখলেন প্রস্তুতি ম্যাচে।
প্রথম ৭৮ ওভারে ৭
উইকেটে ২৯১ রান করা শ্রীলঙ্কা বোর্ড সভাপতি একাদশ শেষ ১২ ওভারে রান তুলেছে
টি-টোয়েন্টির ধাঁচে। অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেটে চান্ডিমাল-চামিকা
করুনারত্নের জুটি যোগ করেছে ৭২ বলে ১১২ রান। স্পিনারদের মধ্যে মিরাজই একটা
উইকেট পেয়েছেন, বিনিময়ে গুনতে হয়েছে ৬৮ রান। শ্রীলঙ্কানরা সবচেয়ে বেশি
চড়াও হয়েছেন তাইজুলের ওপর। বাঁহাতি এই স্পিনার ১২ ওভারে ৭৯ রান দিয়ে ছিলেন
উইকেটশূন্য। প্রথম ৯ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়েছিলেন সাকিব, কিন্তু তাঁর শেষ ২
ওভারে চান্ডিমালরা তুলেছেন ৩৫ রান!
ব্যাটিং ভালো হয়েছে, পেসাররাও
খারাপ করেননি। সাকিব-মিরাজরা হয়তো উইকেট থেকেই খুব একটা সাহায্য পাননি, তবে
সেটা পুষিয়ে দেওয়ার জন্য আসল লড়াই তো বাকি থাকলই।
প্রস্তুতি ম্যাচের সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ৩৯১/৭ ডি.
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি একাদশ ১ম ইনিংস:
৯০ ওভারে ৪০৩/৭ (চান্ডিমাল ১৯০*, করুনারত্নে ৫০*, রোশেন ৩৮, হাসারাঙ্গা
৩২, রুমেশ ৩২; তাসকিন ৩/৪১, মোস্তাফিজ ২/২৮, সৌম্য ১/৫৩, মিরাজ ১/৬৮,
মুমিনুল ০/১৩, মাহমুদউল্লাহ ০/২৫, শুভাশিস ০/৪৪, সাকিব ০/৪৯, তাইজুল ০/৭৯)।
ফল: ড্র।
No comments:
Post a Comment