এই তো কিছুদিন আগেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে টানা হারের অভিজ্ঞতা হয়েছে
শ্রীলঙ্কার। টেস্ট কিংবা ওয়ানডে প্রতিটি হারই ছিল বড় ব্যবধানে। তবে একটা
বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাওয়া লঙ্কান ক্রিকেট দলের সেই হারও নাকি
এতটা সমালোচনার জন্ম দেয়নি, যতটা দিচ্ছে গতকাল ডাম্বুলায় বাংলাদেশের কাছে
৯০ রানের বড় হার।
এমন তথ্য শ্রীলঙ্কার অন্যতম শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক দ্য আইল্যান্ডের।
পত্রিকাটি আজ তাদের ওয়েব পোর্টালে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই হারকে
‘যন্ত্রণাদায়ক’ এক হার বলছে।
প্রতিবেদনের শিরোনামই তারা দিয়েছে
‘যন্ত্রণাদায়ক’ শব্দটি ব্যবহার করে—দ্যাট পেইনফুল ডিফিট—দ্য আইল্যান্ডের
শিরোনাম।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা হার আর বাংলাদেশের বিপক্ষে ৯০ রানে
প্রথম ওয়ানডে হারের তুলনা টেনে পত্রিকাটি লিখেছে, ‘পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে
যাওয়া একটি দল যখন বিশ্বের এক নম্বর দলের বিপক্ষে কঠিন কন্ডিশনে খেলে, তখন
বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়াটা তাও মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু নবীনতম টেস্ট
খেলুড়ে দেশ বাংলাদেশের বিপক্ষে এই হার মেনে নেওয়া সত্যিই খুব কঠিন।’
বাংলাদেশের
প্রশংসা করতে অবশ্য ভোলেনি আইল্যান্ড, ‘আমরা বাংলাদেশের এই সাফল্যকে
কোনোভাবেই খাটো করে দেখছি না। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ গত
তিন বছরে উন্নতি করে চলেছে ধারাবাহিকভাবেই। সেই হাথুরু, যাকে শ্রীলঙ্কান
ক্রিকেট বোর্ড চাকরি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। আমাদের মনে রাখা উচিত,
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডের এই দুটি জয়ের আগে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে
ইংল্যান্ডের বিপক্ষ টেস্ট ও ওয়ানডে জিতেছে।’
আইল্যান্ডের মতে,
শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট দলকে যে সমস্যাগুলো অনেক দিন ধরে তাড়া করে ফিরছে,
বাংলাদেশের কাছে হার তারই সর্বশেষ ফল। তারা আক্ষেপ করে লিখেছে, সমস্যাগুলোর
প্রতি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চলেছে অনেক দিন ধরেই,
কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই।
আইল্যান্ড শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের বেশ কিছু
সমস্যা তুলে ধরেছে। লঙ্কান দলের ফিল্ডিং-দুর্বলতার কথা উল্লেখ করে তাদের
বক্তব্য, ‘১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ জয়ের সময় শ্রীলঙ্কা ছিল বিশ্বের অন্যতম সেরা
ফিল্ডিং দল। আমাদের তুলনা হতো কেবল অস্ট্রেলিয়া কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার।
কিন্তু এখন আমরা বিশ্বের বাজে ফিল্ডিং শক্তির একটি। যাদের সঙ্গে তুলনা চলে
কেবল পাকিস্তানেরই।’
পত্রিকাটি শ্রীলঙ্কার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের বাজে
অবস্থার কথা বলেছে। আঞ্চলিক ক্রিকেটে জোর দেওয়ার বদলে ক্লাব ক্রিকেট নিয়ে
পড়ে থাকার সমালোচনা করে তারা বলেছে, এই ব্যাপারটি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে
পিছিয়ে দিচ্ছে। সব শেষ তারা বোর্ডের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির সমালোচনা করে
কাঠগড়ায় তুলেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের প্রধান থিলাঙ্গা সুমাথিপালাকে। বলেছে,
‘নিজের ভোট ব্যাংকের দিকে মন না দিয়ে সুমাথিপালা যদি ক্রিকেটের উন্নয়নে
মনোযোগ দেন, তাহলে আমাদের (লঙ্কান ক্রিকেট) বেঁচে যায়।’
No comments:
Post a Comment